শুক্রবার পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে বৃহত্তর ময়মনসিংহ সাংস্কৃতিক ফোরামের রজতজয়ন্তী ও সাংস্কৃতিক উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উদ্যোক্তা থেকে মন্ত্রিত্ব পাওয়া জব্বার বলেন, “আমাদের প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থা আমাদের জন্য বেকার তৈরির কারখানায় পরিণত হয়েছে। প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে প্রকৃত অর্থে সামনের দিনগুলোতে আমাদের সন্তানদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারব না।”
এ কারণে পাঠ্যক্রম, পাঠদান পদ্ধতি এবং শিক্ষকসহ শিক্ষা ব্যবস্থায় ‘আমূল পরিবর্তন’ আনার ওপর জোর দেন আইসিটি মন্ত্রী।
তিনি বলেন, “আমাদের সন্তানরা অসম্ভব মেধাবী, এই মেধাবীদের যদি মেধাবী হিসেবে গড়ে তুলতে না পারি তাহলে এর ব্যর্থতা দায়ভার আমাদের বহন করতে হবে।”
বৃহত্তর ময়মনসিংহ সাংস্কৃতিক ফোরামের সভাপতির দায়িত্বে থাকা মোস্তাফা জব্বার রাজনীতির বাইরে থেকে হঠাৎ মন্ত্রিত্ব পাওয়ার বিষয়েও কথা বলেন।
“সত্যিকার অর্থে ১ তারিখ বেলা ১টা ২৯ মিনিটের আগ পর্যন্ত ভাবিনি যে মন্ত্রীর দায়িত্ব, তাও আবার পূর্ণ মন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হবে। পরে আমি ভাবছিলাম- মন্ত্রী তো হব, কিন্তু কিসের দায়িত্ব পালন করব? প্রধানমন্ত্রীকে আবারও কৃতজ্ঞতা, তিনি আমাকে যে জায়গায় রেখেছেন যা আমার ৩০ বছরের জায়গা।”
প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে জব্বার বলেন, “৪৭ বছর ধরে তার স্নেহ পেয়ে আসছি। ১৯৭০ সালে বাংলা বিভাগে তার সাথে লেখাপড়া করার সুবাদে সুদীর্ঘ সময় যে পরিমাণ স্নেহ পেয়েছি, তার তুলনা হয় না।”
মন্ত্রী হিসেবে বৃহস্পতিবার প্রথম অফিস করেন মোস্তাফা জব্বার। সেই অনুভূতি প্রকাশ করে তিনি বলেন, “মন্ত্রী হওয়ার সামান্য ওজন বেড়েছে। কী রকম ওজন বেড়েছে? পতাকাওয়ালা গাড়িতে ঘুরতে হয়। সাথে সাথে একজন লোক ঘুরে বেড়ায়… মাঝে মাঝে বিরক্তিকর মনে হয়।
“আবার অন্য দিক থেকে…. অনেকে হয়ত আমাকে চিনতেন আমার বই পড়ে বড় হয়েছেন বলে, অথবা কম্পিউটার অন করে মোস্তাফা জব্বারের ছবি দেখছেন। এখন আমাকে ফোন করলে তাদের মনে হবে মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলছেন, এতে ওজনটা বেড়ে যাবে।”
বিজয় বাংলা কিবোর্ডের প্রবর্তক মোস্তাফা জব্বার আনন্দ প্রিন্টার্স এবং আনন্দ মুদ্রায়ণের প্রতিষ্ঠাতা। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সভাপতি হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে তার ভূমিকার কথা মনে করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ অনুষ্ঠানে বলেন, “কি-বোর্ড নিয়ে যে লড়াই করেছেন, দেশের প্রতি যে অবদান রেখেছেন, তার জন্যই মন্ত্রিত্ব পেয়েছেন।”
আজাদের মতে, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার অভিযাত্রাকে আরও এগিয়ে নিতে প্রধানমন্ত্রী ‘সঠিক সময়েই’ মোস্তাফা জব্বারকে আইসিটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়েছেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ফোরামের মহসচিব রাশেদুল হাসান শেলী। কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ এইচ এম মোস্তাফিজুর রহমান ও নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুস সামাদও বক্তব্য দেন অনুষ্ঠানে।
একে/এম