ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সরিয়ে নেওয়ার পর তারানা হালিমের অসন্তোষের খবরও গণমাধ্যমে এসেছিল।
এদিকে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের নতুন প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলী ব্যক্তিগত ব্যস্ততার কারণে বৃহস্পতিবার অফিস করেননি।
নিজেদের মধ্যে দপ্তর বদলের পর পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আসিনুল ইসলাম মাহমুদও নতুন অফিসে যাননি। নতুন পানিসম্পদমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু অফিসে না গেলেও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্পের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যোগ দেন বৃহস্পতিবার।
সরকারের শেষ বছরে গত মঙ্গলবার মন্ত্রিসভায় নতুন চারজনের শপথ নেওয়ার পরদিন শেখ হাসিনা কয়েকজন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর দপ্তর পুনর্বণ্টন করলে ডাক ও টেলিযোগাযোগের দায়িত্ব হারান তারানা।
অভিনেত্রী-সংস্কৃতিকর্মী তারানা প্রায় তিন বছর আগে এই মন্ত্রণালয়ে যোগ দেওয়ার পর কোনো মন্ত্রী ছিল না। তাকে এখন পাঠানো হয়েছে তথ্য মন্ত্রণালয়ে, সেখানে মন্ত্রী আছেন হাসানুল হক ইনু।
টেলি যোগাযোগের দায়িত্ব পাওয়া নতুন মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার বুধবার এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের বলেন, “টেলিকম ডিভিশনের প্রতিমন্ত্রী সেখানে আর নেই, কেন নেই আমি তা বলব না।”
নতুন মন্ত্রী মন্ত্রণালয়ের এতদিনের কাজ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেছিলেন, “আমি ধারণা করতে পারি নাই যে টেলিকম ডিভিশনে ক্যান্সারের মতো সমস্যা বিরাজ করে, আর তা সমাধান করার জন্য কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।”
তারানা প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের সময় টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ বিটিআরসির সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের দ্বন্দ্বের বিষয়টিও প্রকাশ পেয়েছিল। নতুন মন্ত্রী জব্বার বলেছেন, তিনি বিটিআরসিকে নিয়ন্ত্রণ করবেন না, বরং সহযোগিতা করবেন।
গত ২৭ ডিসেম্বর সচিবালয়ে সবশেষ অফিস করেন তারানা।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের দুই বছরের অর্জন নিয়ে মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) একটি সংবাদ সম্মেলনে আসার কথা ছিল তারানার।
কিন্তু আগের দিন বিকালে মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণের পাশাপাশি মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের দপ্তর রদবদলের গুঞ্জনের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর রাতে ‘অনিবার্য’ কারণে তা স্থগিত করেন তারানা।
বৃহস্পতিবার ঢাকার গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি স্কুলে একটি অনুষ্ঠানে তারানার থাকার কথা থাকলেও তিনি ছিলেন না।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে গেলে কর্মকর্তারা জানান, তারানা হালিম আসেননি বলে তাকে আনুষ্ঠানিক বিদায় জানানোও হয়নি।
ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “গত ৩১ ডিসেম্বরই নয় দিনের ছুটির একটি আবেদন করেছিলেন প্রতিমন্ত্রী। গতকাল (বুধবার) তা প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়েছে।”
বিষয়টি নিয়ে তারানা হালিমের সঙ্গে কথা বলতে একাধিকবার তার মোবাইলে কল করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। সন্ধ্যায় বাড়িতে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।
বৃহস্পতিবার তথ্য মন্ত্রণালয়ে গিয়ে দেখা যায়, তারানা হালিমের জন্য একটি কক্ষ প্রস্তুত করা হচ্ছে।
নতুন প্রতিমন্ত্রীর জন্য বরাদ্দ করা ৮০১ নম্বর কক্ষে আগে এই মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. নাসির উদ্দিন আহমেদ বসতেন।
গত ৩১ ডিসেম্বর নাসির উদ্দিনকে ভারপ্রাপ্ত সচিবের পদমর্যাদায় তথ্য সচিব পদে নিয়োগ দেয় সরকার। এরপর থেকে ওই কক্ষটি ফাঁকাই ছিল।
পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল পাশা বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জানান, নতুন মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এদিন অফিস করেননি।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা আফরাজুর রহমান বলেন, প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলী বৃহস্পতিবার গোপালগঞ্জ যাওয়ায় অফিস করেননি।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, নতুন প্রতিমন্ত্রীর দপ্তর কোথায় হবে সেটা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। প্রতিমন্ত্রী যদি সচিবালয়ে বসতে চান তাহলে সচিবালয়েই তার অফিস করা হবে।
কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী সচিবালয় লাগোয়া পরিবহন পুল ভবনের দুটি ফ্লোরে অফিস করেন জানিয়ে ওই কর্মকর্তা বলেন, ওই ভবনেও তার অফিস হতে পারে। সেখানে একটি কক্ষ প্রস্তুতও আছে।
একে/এম