৩রা নভেম্বর ১৯৭৫ দিনটি বাঙ্গালীর ইতিহাসে একটি লজ্জাজনক দিন। ১৯৭৫ সালের এই দিনে ঢাকায় কেন্দ্রীয় কারাগারে নির্মমভাবে হত্যাকরে বাঙ্গালী জাতির চার জাতীয় নেতাকে। তারা শুধু জাতিয় নেতাই ছিলেন না তাঁরা বাঙ্গালী জাতির চার রত্ন ছিলেন। এই চার নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর খুব ঘনিষ্ঠ ছিলেন। ১৯৭৫ সালে জাতির জনককে স্বপরিবারে হত্যার পর এই চার নেতাকে তখনকার শাসকগোষ্ঠী কারাগারে পাঠায়। আমরা সবাই জানি যে, কারাগার একটি নিরাপদ স্থান কিন্তু চার নেতার জন্য সেই নিরাপদ স্থানই ছিল সবচেয়ে অনিরাপদ। ঘাতকেরা কারাগারে প্রবেশ করে তাদেরকে ব্রাশফায়ার করে নৃশংসভাবে হত্যা করে।
সেই দিন বাঙ্গালী জাতি হারিয়েছে তাদের চার রত্নকে। বাঙ্গালী জাতি সেদিন হারিয়েছে তাদের সূর্যসন্তানদের। যারা বেঁচে থাকলে বাংলাদেশ নিয়ে যেতে পারত অন্যন্য উচ্চতায়। ঘাতকদের প্রথম টার্গেট ছিল বঙ্গবন্ধু। তাকে হত্যা করার পর ঘাতকদের নজর ছিল এই চার নেতার উপর। কারণ তাঁরা জানত বঙ্গবন্ধুর পর এই চার নেতাই বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। তাঁরা বেঁচে থাকলে এই ঘাতকেরা দেশে অপশাসন চালাতে পারবেনা। তাই পরিকল্পিতভাবে ঘাতকেরা এই চার বীর সন্তানকে হত্যা করে।
ঘাতকেরা তাদের হত্যা করলেও তাঁরা বাঙ্গালীর কাছে এখনও বেঁচে আছে। বাঙ্গালী তাদের ভোলেনি,কখনও ভুলবেও না। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন বাঙ্গালীর মনে বেঁচে থাকবে এই সূর্যসন্তানেরা।
জাতিয় চার নেতার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা-
সৈয়দ নজরুল ইসলাম- বাংলাদেশের প্রথম সরকার, মুজিবনগর সরকারের উপ-রাষ্ট্রপতি এবং ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি ছিলেন। তিনি বাকশালের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন।
তাজউদ্দীন আহমদ- একজন আইনজীবী, রাজনীতিবিদ ও বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তিনি সাবেক অর্থমন্ত্রী এবং সংসদ সদস্যও ছিলেন।
আবুল হাসনাত মোহাম্মদ কামারুজ্জামান- একজন সংসদ সদস্য ছিলেন। তিনি ১৯৭৪ সালে আওয়ামী লীগের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে গঠিত অস্হায়ী সরকারের স্বরাষ্ট্র,কৃষি এবং ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী ছিলেন।
মুহাম্মদ মনসুর আলী- মুজিবনগর সরকারের অর্থমন্ত্রী ছিলেন। শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক বাকশাল প্রতিষ্ঠার পর তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।
Powered by : Oline IT