সিটিজি জার্নাল নিউজঃ চাকরি স্থায়ী করার দাবিতে আন্দোলনে নামতে যাচ্ছে বিমানের ক্যাজুয়াল (চুক্তিভিত্তিক) শ্রমিক ও সিবিএ নেতারা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) বিমানের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে শ্রমিক সমাবেশের ডাক দিয়েছে বিমান শ্রমিক লীগ। ওইদিন সকাল ১১টায় বিমানের প্রধান কার্যালয়ে বলাকা ভবনের সামনে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনও ঘোষণা না দিলে সমাবেশ থেকে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানা গেছে।
বিমানে প্রায় দুই হাজার ২০০ ক্যাজুয়াল শ্রমিক রয়েছে। যাদের মধ্যে ৭০০ জন ১০ দিনের এবং বকিরা ৮৯ দিনের চুক্তিতে নিয়োগ পান। মেয়াদ শেষ হলেই পরের দিনে তাকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে যেতে হয়। এরপর আবার ১০ বা ৮৯ দিনের জন্য তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়।
মূলত বিমানের কার্গো সার্ভিস,গ্রাউন্ড সার্ভিস, ট্রাফিক, ইঞ্জিনিয়ারিং ও মটর ট্রান্সপোর্ট বিভাগে ক্যাজুয়াল শ্রমিক বেশি।
এ প্রসঙ্গে বিমান শ্রমিক লীগের সভাপতি মশিকুর রহমান বলেন, ‘প্রায় ৩০ বছর ধরে বিমানের ক্যাজুয়াল শ্রমিকরা বঞ্চিত হচ্ছেন। একই কাজ করলেও একজন স্থায়ী শ্রমিক যে বেতন পান তার সমপরিমাণ বেতন একজন ক্যাজুয়াল শ্রমিক পান না। দীর্ঘদিন ধরে বিমান প্রশাসন অরগানোগ্রাম তৈরির অজুহাতে ক্যাজুয়াল শ্রমিকদের সমস্যা সমাধান করছে না। ২০০৭ সালে বিমানকে কোম্পানিতে রূপান্তর করা হয়। কিন্তু এখনও অরগানোগ্রাম করা হয়নি। বাংলাদেশের সংবিধান রচনা করতেও এত সময় লাগেনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটা শুধু শ্রম আইন নয়, রাষ্ট্রীয় আইনের পরিপন্থী। এসব শ্রমিকদের পরিশ্রমেই বিমানের উন্নয়ন হয়, মুনাফা হয়, কর্মকর্তাদের বেতন ভাতা বাড়ে। এটা নীতি বিবর্জিত ব্যবসায়িক উন্মাদনা মাত্র।’
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এক প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলইন্সের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর চাকরি এসেনশিয়াল সার্ভিস অর্ডিন্যান্সের আওতাভুক্ত করা হয়েছে। কেউ দায়িত্ব পালন না করলে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারবে বিমান কর্তৃপক্ষ। সমাবেশে এ আইন ভঙ্গ হবে কিনা- জানতে চাইলে মশিকুর রহমান বলেন, ‘কর্মবিরতি দিয়ে কেউ সমাবেশে আসবেন না। বিমানের কাজ শিফট ভিত্তিতে হয়। সমাবেশের সময় যাদের ডিউটি নেই তারাই সমাবেশে আসবেন। ফলে এসেনশিয়াল সার্ভিস অর্ডিন্যান্স অমান্য হবে না।’
এ প্রসঙ্গে জানতে বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মোসাদ্দিক আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।
ক্যাজুয়াল ও স্থায়ী শ্রমিকদের সুবিধার পার্থক্য
বিমান সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে ক্যাজুয়াল শ্রমিকদের বাইরে রেখেই পে-স্কেল ঘোষণা করে বিমান। স্থায়ী পদে একজন শ্রমিকের মূল বেতন ২৫ হাজার টাকা। কিন্তু একজন ক্যাজুয়াল শ্রমিকের বেতন মাত্র ১২ হাজার টাকা। স্থায়ী শ্রমিকরা দুই ঈদে মূল বেতনের সমপরিমাণ বোনাস পেলেও ক্যাজুয়াল শ্রমিকদের ফিক্সড দুই হাজার টাকা বোনাস দেওয়া হয়। স্থায়ী শ্রমিকদের বাৎসরিক বেতন বৃদ্ধি ও পদন্নোতি হলেও এ সুবিধা পান না ক্যাজুয়াল শ্রমিকরা। একইসঙ্গে স্থায়ী শ্রমিক কর্মস্থলে দুর্ঘটনার শিকার হলে ক্ষতিপূরণ, চিকিৎসা ভাতা, জীবন বীমা সুবিধা পেলেও ক্যাজুয়াল শ্রমিকরা এসব সুবিধা থেকে বঞ্চিত। এছাড়া, অসুস্থতার জন্য কোনও ছুটি পান না ক্যাজুয়াল শ্রমিকরা।
একে/এম
Powered by : Oline IT