সিটিজি জার্নাল নিউজঃ ঘন কুয়াশা আর কনকনে ঠাণ্ডায় নাকাল হয়ে পড়েছে দেশের উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামের জনজীবন। তীব্র শীতে বিপাকে পড়েছে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজ করে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষ। পাশাপাশি দুর্ভোগে পড়েছে শিশু ও বৃদ্ধরা। কয়েক দিন ধরে ক্রমহ্রাসমান তাপমাত্রায় হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে ঠাণ্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের তথ্যানুযায়ী বুধবার (১০ জানুয়ারি) কুড়িগ্রামে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের পর্যবেক্ষক মো.জাকির হোসেন জানান, তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তে শুরু করেছে,দুই একদিনের মধ্যে চলমান শৈত্য প্রবাহ কেটে যাবে। তবে এক সপ্তাহের ব্যাবধানে আবারও শৈত্য প্রবাহের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান জাকির হোসেন।
এদিকে চলমান ঠাণ্ডায় হাসপাতালগুলোতে বাড়তে শুরু করেছে রোগীর সংখ্যা। কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. শাহিনুর রহমান সরদার জানান, ‘হাসপাতালে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বুধবার (১০ জানুয়ারি) পর্যন্ত কোল্ড ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ২৩ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। যার মধ্যে ২১ জনই শিশু।
অন্যদিকে প্রচণ্ড ঠাণ্ড উপেক্ষা করে পেটের দায়ে বের হওয়া মানুষদের এক জন পৌর এলাকার রাজমিস্ত্রি মির্জা জানান, ‘যে ঠাণ্ডা তাতে ল্যাপ কম্বল গাত দিয়াও ঠাণ্ডা যায় না, কেমন করি, কাজ করি! কিন্তু কাজ না করলে খামু কি?’
প্রচণ্ড ঠাণ্ডার মধ্যেও শীত বস্ত্রের ছাড়া দিন কাটাচ্ছে জেলার চরাঞ্চলের মানুষ। চাহিদা অনুযায়ী শীতবস্ত্র বরাদ্দ না পাওয়ায় অভাবগ্রস্ত শীতার্তদের মাঝে কোনও শীতবস্ত্র বিতরণ করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন।
চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন জানান, আমার ইউনিয়নের পুরোটাই ব্রহ্মপুত্রের চর এলাকা। এখানকার প্রায় সব মানুষই অভাবী। এ ঠাণ্ডায় ইউনিয়নবাসী খুব কষ্টে আছে। এ পর্যন্ত মাত্র তিনশ’ ৮০ পিস কম্বল বরাদ্দ পেয়েছি যা বিতরণ করা হয়েছে। এই সামান্য বরাদ্দ দিয়ে দুর্ভোগে থাকা হাজারো মানুষের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব না।
জেলা প্রশাসনের ত্রাণ ও পূণর্বাসন কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী বিগত বছরের তুলনায় এবার প্রায় দ্বিগুণ শীতবস্ত্র (কম্বল) বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এখন পর্যন্ত ৫৭ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। আরও ৫ হাজার কম্বলের বরাদ্দ পাওয়া গেছে যা শিগগিরই বিতরণ করা হবে।
জেলা প্রশাসক আবু ছালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান জানান, প্রান্তিক পর্যায়ে দুস্থদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শীত বস্ত্র দেওয়া হচ্ছে। আমরা আরও চাহিদা পঠিয়েছি, হাতে পাওয়া মাত্র বিতরণ করা হবে।
একে/এম
Powered by : Oline IT