আটককৃতরা হলেন – কাইছার হামিদ রাজু (৩১), মামুন উদ্দিন (৩৫), হারাধন দাশ ধনি (৩৭), জাহেদুল আজম (৩৫), মো. শাহেদ রানা (৩১), শওকত আলী মানিক (৩২), সেলিম মাহমুদ সেলিম (৪৪), রেজাউল করিম (৫১), মো. রুবেল (৩০), জাসেদুল করিম বাবুল (৩৫) ও মো. মাসুদ (২৮)।
পুলিশ কর্মকর্তা শওকত বুধবার সাংবাদিকদের বলেন, “আটককৃতরা গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে লোকজনকে তুলে নিয়ে তাদের সর্বস্ব কেড়ে নেয়। ডিবি লেখা জ্যাকেট পরে দিনে-দুপুরে এ কাজ করে তারা। এ জন্য তারা মোটরসাইকেল ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা ব্যবহার করে।
“তাদের কাছ থেকে দুটি ‘ডিবি’ লেখা জ্যাকেট, একজোড়া হ্যান্ডকাপ, একটি ওয়্যারলেস সেট, একটি খেলনা পিস্তল, ৩২ হাজার ৫০০ টাকা, দুটি মোবাইল ফোন সেট, দুটি মোটরসাইকেল ও একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা উদ্ধার করেছে পুলিশ।”
গত ২ জানুয়ারি ইমন নামে এক কলেজছাত্রের মামলার সূত্র ধরে পুলিশ অভিযানে নামে বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা শওকত আলী।
তিনি বলেন, ইমন গত ২৮ ডিসেম্বর প্রবাসী মামার পাঠানো টাকা ব্যাংক থেকে তুলে বাসে উঠেছিলেন। গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে ইমনকে বাস থেকে জোর করে নামিয়ে অটোরিকশায় তুলে নেয় তিনজন।
“ইমনের কাছে ইয়াবা আছে এমন অভিযোগ করে তারা তার ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। পলোগ্রাউন্ড এলাকায় পৌঁছে তারা ব্যাগ থেকে এক লাখ ৬৭ হাজার টাকা কেড়ে ছিনিয়ে নেয়। অটোরিকশাটি কদমতলী-দেওয়ানহাট ফ্লাইওভারে ওঠার পর ইমনকে তারা মারধর করে গাড়ি থেকে ফেলে চলে যায় বলে ইমনের অভিযোগ। এ সময় ইমন অটোরিকশার নম্বর মুখস্থ করে রাখেন।”এ ঘটনায় ২ জানুয়ারি নগরীর কোতোয়ালি থানায় ইমন একটি মামলা করেন জানিয়ে তিনি বলেন, মামলার পর গোয়েন্দা পুলিশ অটোরিকশার সূত্র ধরে অভিযানে নামে।
আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের তথ্য দিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা শওকত বলেন, তারা নগরীর বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আশপাশে অবস্থান নিয়ে সেখানে আসা লোকজনের গতিবধি লক্ষ করে।
“কয়েকজন ব্যাংকের আশপাশে থেকে টার্গেট নির্ধারণ করে দলের অন্য সদস্যদের জানায়। পরে তারা গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে তুলে নেয়। সুবিধাজনক স্থানে গিয়ে সব কেড়ে নিয়ে দ্রুত চলে যায়। আটককৃতরা এ ধরনের অন্তত ১০টি ঘটনা ঘটিয়েছে বলে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে।”
আটককৃতদের মধ্যে মামুন উদ্দিনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি থানায় হত্যাসহ ‘কয়েকটি’ মামলা রয়েছে বলে জানালেও অন্যদের অপরাধ সম্পর্কে কোনো তথ্য দিতে পারেনি পুলিশ।
আটক কায়ছার হামিদ রাজু এই দলের নেতৃত্ব দিতেন জানিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা শওকত বলেন, কায়সার নগরীর এনায়েত বাজার বাটালি রোড এলাকার আব্দুল মালেকের ছেলে।
ডাকাতির পর তারা সবাই নগরীতে নিজেদের বাসাতেই বসবাস করতেন বলে
নগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (উত্তর) অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মো. কামরুজ্জামান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, “এ ধরনের আর কোনো চক্র সক্রিয় আছে কিনা তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি ডিবি লেখা জ্যাকেট ও সরঞ্জাম তারা কিভাবে পেল সে বিষয়েও তদন্ত করা হবে।”
একে/এম