খুলনা প্রেসক্লাবে শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করে চোখ হারানো শাহজালাল ওরফে শাহজামালের পরিবার।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে শাহাজালালের বাবা মো. জাকির হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার তাদের আইনজীবী মোমিনুল ইসলাম, খালিশপুর থানার ওসি নাসিম খান, এসআই তাপসসহ তিন পুলিশ সদস্য মামলা তুলে নেওয়ার বিষয়ে কথা বলতে শাহজালালদের খালিশপুরের বাসায় যান।
“তারা শাহজালালের চোখ উপড়ানোর মামলা তুলে নেওয়ার বিনিময়ে সাত লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের প্রস্তাব দেন। অন্যথায় তাদের দেখে নেওয়ার হুমকি দেন ওসি নাসিম খান।”
জাকির হোসেন আরও বলেন, এ মামলায় শাহজালালের আইনজীবী মোমিনুল ইসলাম ওই সময় বলেন- ‘খামোখা মামলা চালিয়ে কী হবে। তার থেকে মাদ্রাজ নিয়ে সাত লাখ টাকা দিয়ে যদি শাহজালালের চোখের অপারেশন করা যায় তাহলে আবার দেখতে পাবে।’
তাদের প্রস্তাবে শাহজালাল এবং তার পরিবারের সদস্যরা রাজি না হওয়ায় এসআই তাপসসহ অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা তাদেরকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। এ ধরনের অব্যাহত হুমকিতে তারা আতঙ্কিত রয়েছেন বলে তিনি জানান জাকির হোসেন।
সংবাদ সম্মেলনে আসা শাহজালালের মা বলেন, “এমন দৃশ্য যেন আর কোনো মাকে দেখতে না হয়। আমার ছেলেকে পুলিশের লোকজন চোখ তুলে নিয়ে চিরজীবনের জন্য অন্ধ করে দিয়েছে।
“শাহজালালের ছোট মেয়েটির কথাও যারা ভাবেনি তারাই আজ সাত লাখ টাকা দিয়ে মামলা তুলে নিতে চাপ দিচ্ছে।”
এ ব্যপারে শাহজালালের আইনজীবী বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা খুলনা জেলা সমন্বয়কারী মো. মোমিনুল ইসলাম তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
তিনি বলেন, “শাহজালাল ও তার বাবা জাকির হোসেন মিথ্যাবাদী। আমি মামলা তুলে নেওয়ার ব্যাপারে কোনো মধ্যস্থতা করিনি। বরং শনিবার যে প্রেস কনফারেন্স হয়েছে তা নিজে টাকা দিয়ে কম্পোজ করিয়ে দিয়েছি।”
খালিশপুর থানার ওসি মো. নাসিম খানও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
তিনি বলেন, “একজন সন্ত্রাসীকে আমি কেন টাকা দিতে চাইব। মামলা তুলে নেওয়ার ব্যাপারে কোনো কথাই তাদের সাথে হয়নি।”
শাহজালালের চোখ তুলে ফেলার অভিযোগে তার বাবা জাকির হোসেনের মামলায় বলা হয়, গত বছরের ১৮ জুলাই রাতে খালিশপুর থানা ওসি নাসিম খানের নেতৃত্বে শাহজালালকে বাড়ির সামনে থেকে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাদের চাহিদামতো টাকা দিতে না পারায় শাহাজালালকে খুলনা বাইপাস এলাকায় নিয়ে হাত-পা ও মুখ বেঁধে স্ক্রু ড্রাইভার দিয়ে তার দুই চোখ তুলে ফেলা হয়।
এই মামলায় ওসি নাসিম খানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে করা এই মামলা বর্তমানে পিবিআই তদন্তে করছে।
একে/এম