নিজস্ব প্রতিনিধি, চকরিয়াঃ
কক্সবাজারের চকরিয়ায় পরিবেশ অধিদপ্তর ও বনবিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে সমঝোতার মাধ্যমে পাহাড় কেটে নতুন ইটভাটা স’াপনের হিড়িক চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। দুইমাস আগে থেকে উপজেলার সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়নে মানিকপুর বনবিট ও লামা বনবিভাগের পাইতং বনবিটের অধীন বনবিভাগের একাধিক পাহাড় কেটে সমতল করে সরকারি অনুমোদন ছাড়াই এসব ইটভাটা স’াপনের কাজ অব্যাহত রয়েছে। পরিবেশ আইনে পাহাড় কাটা নিষিদ্ধ থাকলেও বিষয়টি নিয়ে কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তর ও বনবিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা রয়েছে দর্শকের ভুমিকায়। এ অবস’ার কারণে ইটভাটার পার্শ্ববর্তী এলাকায় পরিবেশ বির্পযয়ের আশঙ্কা করছেন স’ানীয় জনপ্রতিনিধিসহ পরিবেশ সচেতন মহল।
তবে গত অক্টোবর মাসে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানার ওসির নেতৃত্বে লামা উপজেলা প্রশাসন অভিযান চালিয়ে পাইতং অংশের পাঁচটি ইটভাটা মালিককে পাহাড় কাটার ঘটনায় অভিযুক্ত করে ৫লাখ টাকা জরিমানা করেছেন। এরপর থেকে ইটভাটা মালিকরা পাহাড় কাটবেনা প্রশাসনের কাছে এমন মুচলেকা দিলেও তা অমান্য করে চকরিয়ার এক ইটভাটা মালিক মাটি কাটার যন্ত্র দিয়ে প্রতিদিন পাহাড় কাটার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিরা।
মুঠোফোনে পাহাড় কাটার সত্যতা স্কীকার করেছেন এই ইটভাটা মালিক আবদুর রহমান বাবুল চৌধুরী। তিনি বলেন, লামা উপজেলা প্রশাসনের অভিযানের সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পাঁচটি ইটভাটায় ৫ লাখ টাকা জরিমানা করেছে। প্রশাসনের অভিযানের পর থেকে অন্যরা কাটছে কিনা জানিনা, তবে তিনি পাহাড় কাটার সাথে জড়িত নেই বলে জানান।
স’ানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, চকরিয়া উপজেলার সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়নে আগে ইটভাটা ছিল দুইটি। কিন’ এবছর আরো পাঁচটি ইটভাটা নির্মাণ করা হয়েছে। তারমধ্যে কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের চকরিয়া উপজেলার মানিকপুর বনবিট এলাকায় দুইটি ও লামা বনবিভাগের পাইতং বনবিট এলাকায় পাঁচটি ইটভাটা রয়েছে। এসব ইটভাটা স’াপনে প্রশাসনের অনুমতি নেই। ছাড়পত্র নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের।
জনপ্রতিনিধিরা জানান,নতুন পুরানো সাতটি ইটভাটায় কাজের শুরুতে মালিকরা প্রায় প্রতিদিনই পাহাড় কেটে নিচ্ছে। আবার কয়েকটি ইটভাটা তৈরিই করা হয়েছে পাহাড় কেটে জায়গা সমতল করে। এসব ঘটনা সম্পর্কে পরিবেশ অধিদপ্তর ও বনবিভাগের লোকজন অবগত থাকলেও তাঁরা ইটভাটা মালিকদের সাথে ইতোমধ্যে সমঝোতা করেছে বলে জানা যায়। যার কারণে প্রকাশ্যে পাহাড় কাটা অব্যাহত থাকলেও আইন প্রয়োগকারী সংস’াগুলো রয়েছে নীরব দর্শকের ভূমিকায়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক সাইফুল আশরাফ বলেন, চকরিয়া উপজেলার মানিকপুর ও পাইতং অংশে ইটভাটা স’াপনের বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে পরিবেশ আইনে সব ধরনের পাহাড় কাটা নিষিদ্ধ। তিনি বলেন, এমনটা হয়ে থাকলে ঘটনাস’লে অবশ্যই পরিবেশ অধিদপ্তর অভিযান চালাবে। যদি অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায় তাহলে অবশ্যই পরিবেশ আইনে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস’া নেওয়া হবে।
Powered by : Oline IT